বছর জুড়ে অবহেলা দিবস এলেই ধুয়া মুছা

মোহাম্মদ হাসান ফয়জী: শুধু বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস আসলেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে স্বৃতিফলক ধোয়া মোছার হিড়িক পড়ে কর্র্তৃপক্ষের। বাকী বছর জুরেই থাকে অবহেলা ও অযত্নে। বড় দুটি দিবস ছাড়া এ ফলকে জমে থাকে ময়লা স্তুপ। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ প্রশাষনকেই দায়ী করছে।

১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা এই দিনেই হানাদার মুক্ত হয়েছিল। রক্তমাখা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিল মানিকগঞ্জের সুর্য সন্তান রা। মানিকগঞ্জে বাস ষ্টান্ড, বিজয় মেলা মাঠ চত্তরে শহীদ স্বরনে স্বৃতিফলক, সদ্য নির্মিত মানিকগঞ্জ বাস ষ্টান্ডে নির্মিত হয়েছে অদম্য ৭১, তেরশ্রির গনহত্যার স্বরনে স্বৃতিফলক আর ৭টি উপজেলা পরিষদ চত্তরে নির্মিত হয়েছে স্বৃতি ফলক।

এসব স্বৃতি ফলক সারা বছর থাকে বেওয়ারিশের মত। কিন্তু স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস আসলেই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে যায়। ধোয়া মোছা আর পরিসস্কারের যেন প্রতিযোগীতা লেগে যায়। কিন্তু সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা দাবী করেন শুধু দিবস আসলেই যেন সম্মান আর শ্রদ্ধায় মাথা নূয়ে পড়ে। কিন্তু এ সম্মান ত প্রাতিষ্ঠানিক ও দিবস কেন্দ্রিক হওয়া কথা ছিল না। কিন্তু বাস্তাবে তাই দেখা যাচ্ছে।

১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস, দুই রাত পড়েই এসব স্বৃতি ফলকে পুস্প অর্পণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদের সম্মান জানানো হবে। হাতে যেন সময় নেই, এখন প্রশাষনের তদারকিতে স্বৃতি ফলকে চলছে দোয়া মোছার ও পরিস্কারের কাজ । একাধিক নারী শ্রমিক দিয়ে এ পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নের কাজ চলছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাটুরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব সমরেন্দু সাহা লাহোর জানান, ৩০ লাখ শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে যে স্বৃতিফলক তৈরি করা হয়েছে। তা সারা বছর থাকে অযন্তে ও অবহেলায়। কিন্তু দিবস আসলেই তা আলোক সজ্জাসহ বিভিন্নভাবে যতœ নেওয়া হয়। প্রশাষনের এমন আচরনে নতুন প্রজন্মরা মুক্তিযোদ্ধের উপর সঠিক শিক্ষা নিতে পারবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট দীপক ঘোষ জানান, যে মুক্তিযোদ্ধারা   তাদের রক্ত দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সোনার বাংলা গড়ার লক্ষে আমাদের বাংলাদেশ নামক যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল তা যথাযথভাবে দ্রততার সাথে বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলেই শহীদদের জন্য স্বৃতি ফলক সারা বছর যত্ন নিচ্ছে না। আর যারা এ শহীদদের স্বৃতি ফলকের সারা বছর যত্ন না নিয়ে শুদু দিবস কে কেন্দ্র করে ধোয়া মোছা করে তাদের প্রতি নিন্ধা জানাই।

মানিকগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তোবারক হোসেন লুডু জানান, শুধু দিবস কে কেন্দ্র করে স্বৃতি ফলক কে চুন কাম ও পরিস্কার করে এটা প্রশাষনের গাফলতি ছাড়া কিছুই না।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম জানা, দেশ স্বাধীনতার এ দীর্ঘ দিনে অনেক শাষক মুক্তিযোদ্ধের বিপক্ষের লোক শাষন ক্ষমতায় ছিল তাই হয়ত প্রশাষন শুদু দিবস কে কেন্দ্র শহীদ স্বৃতিফলক পরিস্কার করে। কিন্তু এ শহীদ স্বৃতি ফলক ত দিবস কে কেন্দ্র করে তৈরি হয় নি।  সারা বছরই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যারা দেখবে তারা মনের মধ্যে শক্তি ও মুক্তিযোদ্ধের স্বৃতি তাদের মনের মধ্যে জেগে উঠবে এ উদ্যেশই তৈরি করা হয়েছে। আমি স্বৃৃতি ফলক সারা বছর যন্ত না নেওয়ায় ঐ সব দায়িত্ব প্রাপ্ত  কর্মকর্তাদের ধিক্কার জানাই।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাষক নাজুমছ সাদাত সেলিম বলেন, আসলে যার যার অবস্থান থেকেই দায়িত্ব পালন করলে এমনটি নাও হতে পারত। তবে এ ব্যাপারে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষেরই সচেতন ও দায়িত্বশীল হওয়া পয়োজন ।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ১৪ ডিসেম্বর/ ২০১৭।
আরও পড়ুন:

বিজয় দিবসের ৩ দিন আগেও মানিকগঞ্জ অদম্য ৭১ ব্যানার ফেষ্টুনে ঢাকা

আরো পড়ুুন