মানিকগঞ্জের কাটিগ্রাম ক্লাবের ৭০ বছরের পুরনো মাঠ দখলের পাঁয়তারা


মোহাম্মদ হাসান ফয়জী: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম গ্রামে ৭০ বছরের পুরনো কাটিগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাব এর খেলার মাঠটি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। মাঠ আছে ফুটবল খেলার গোলপোস্টও আছে কিন্তু খেলার পরিবেশ
নেই; কারন, এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের অলিখিত চাতাল বানিয়ে রেখেছেন।
এলাকাবাসী
অভিযোগ করে বলেন
 
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী
  মাঠে ভুট্টা, ধান সহ নানান জিনিস শুকানোর নিয়মিত  চাতাল হিসেবে ব্যবহার করছে মাঠে খেলতে গেলে খেলতে দেওয়া হয় না শুধু বৃষ্টি নামলেই মাঠটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়
খেলার জন্য । 

সরেজমিনে
গিয়ে দেখা গেছে এ মাঠটি সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ও আটিগ্রাম দুই ইউনিয়নের সীমানায় পড়েছে।

মাঠে
 কোন ঘাস নেই দেখতে কিছুটা  মরুভুমির মত অপরদিকে পুরনো মাঠ কে
ঘিরে
 
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে মাঠে  কাদা খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
কাটিগ্রামের
সন্তান ও জেলা কৃষক লীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি তপন চন্দ্র মালাকার জানান, দেশ বিভাগের আগে জমিদার প্রথা থাকাকালীন সময় এক জমিদার তৎকালীন
বিনাপানি স্পোর্টিং ক্লাব
 
এর নামে   মাঠ হিসেবে ব্যবহার করার
জন্য জমি দান করেন। 


ক্লাবটি
 
পরবর্তীতে ১৯৪৭ সাল থেকে  কাটিগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাব নামে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ক্লাবটির রেজি
নং হচ্ছে, ম- ০৫৪৮। গত
১০ বছর যাবৎ মাঠে ভুট্টা সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র শুকানোর কারনে প্রায় সময়ই খেলাধুলা বন্ধ
থাকে। এতে এলাকার যুবকরা খেলা ধুলা ছেড়ে নেশার দিকে ঝুঁকছে বলে অভিযোগ করছেন।
অপর
দিকে রবিবার ও বুধবার এ খেলার মাঠে হাট বসলেও তা এলাকাবাসীর সবার স্বার্থে মেনে নিলেও
সারা বছর স্টক ব্যবসায়ীদের নিকট মাঠ

 দখল থাকে, তা মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী।

কাটিগ্রামের
কয়েক যুবক নাম না প্রকাশের শর্তে অভিযোগ করেন, কাটিগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাব চলতি বছর মানিকগঞ্জ
জেলায় ২য় বিভাগ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে রানার্সআআপ  হয়েছে। তাছাড়া গত বছর ২০১৬ তে ফার্স্ট ডিভিশনেও অংশগ্রহণ করেছে। ক্লাবের কমিটি খেলার সময় তাদের সকল সুযোগ সুবিধা দিলেও মাঠ কে খেলাধূলার
পরিবেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে।

তারা
আরো জানান, এলাকার ঝন্টু, মিন্টু, মিটু, সোরহাব মোল্লা, ভুলো , জুয়েলসহ সারা বছর মাঠটি
কে অবৈধভাবে দখল করে আছে। তাদের কে একাধিকবার বললেও ধান, ভুট্টা শুকানোর কারনে ছেলেরা
এখানে খেলাধূলা করতে পারে না।

ব্যাপারে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন
সেলিম মাঠে ভুট্টা শুকানোর বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মাঠে হাট বসে, ক্রেতারা ওখান
থেকে কিনে শুকিয়ে নেওয়াতে খেলা ধুলায় বিঘ্ন ঘটে। তবে এখন সিজন না থাকাতে তারা শুকাচ্ছে
না।

তিনি
আরো জানান, এ বিষয়ে সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কয়েকবার পরিদর্শন করে তাদেরকে সতর্ক
করে দিয়েছে। আর মাঠটি মাটি ভরাটের জন্য মন্ত্রী মহোদয় ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। আমরা সংস্কার করার জন্য আবারো বরাদ্দ চাইব। আর মাঠে ভুট্টা শুকানোর বিষয়ে আমি পরিস্কার
করে বলতে চাই প্রশাসনিকভাবে যাতে বন্ধ তার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যা
লয়ে আবারো যাব।


ব্যাপারে ক্লাবটির সদস্য রিফাতুল ইসলাম রাজিম জানান, আমরা জেলা প্রশাসন কে
মাঠ দখল করা নিয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। পরে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কয়েকবার
তাদের কে সতর্ক করে দিলেও মাঠ ছাড়েন নি ঐ চক্র।


ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো: নাজমুস সা’দাত সেলিম বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে জানান, এ বিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এখন বাহিরে
আছি অফিসিয়াল কাজে মানিকগঞ্জে এসে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।
   
মানিকগঞ্জ২৪/
হা. ফ / ২৬ জুলাই/ ২০১৭।
আরো পড়ুুন